২৭ জুন মুক্তি পেল নাগ অশ্বিন পরিচালিত বহু প্রতিক্ষীত মুভি কল্কি ২৮৯৮ এডি। এই ছবির প্রথম লুক মুক্তির পরই দর্শকের উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়তে থাকে। একদিকে দীপিকা তো অন্যদিকে অমিতাভ ও দক্ষিণী সুপারস্টার প্রভাস। দোসর বাংলার অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। পৌরাণিক কাহিনির উপর ভিত্তি করে তৈরি কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র দর্শককের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারল? পরিচালক নাগ অশ্বিনের ভাবনার কদর করছে দর্শক। ভিএফএক্স এই ছবির ইউএসপি। কিন্তু, চিত্রনাট্যের প্রথমাংশে রয়েছে বেশ খানিক ভুল- ত্কুটি। অশ্বত্থামাকে দিয়ে গল্প শুরু হয়। প্রথমার্ধের বেশিরভাগ অংশই অত্যন্ত ধীর গতিতে এগতে থাকে। মাঝে মধ্যে মনে হবে এটি আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছে। আবার মনেও হতে পারে রক্সি (দিশা পাটানি) এবং ব্রহ্মানন্দমের মতো কিছু চরিত্র যেন অপ্রয়োজনীয়। প্রভাসের সঙ্গে না থাকলেও ভালো হত।
দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই যেন গল্পের শুরু। অশ্বত্থামা এবং ভৈরবের মধ্যে অ্যাকশন সিক্যোয়েন্স দর্শকের মন ছুঁয়েছে। VFX এর কাজ দুর্দান্ত। পৌরানিক কাহিনি অবলম্বনে তৈরি ছবিতে অ্যাকশনের দৃশ্যগুলো যথেষ্ট আড়ম্বরপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ের সেরা VFX গুলির মধ্যে এটি অন্যতম৷ নাগ অশ্বিন এবং তাঁর টিম এই ভিএফএক্স এর জন্য দর্শকের প্রশংসায় ভাসছে।
পরিচালকের ছবি তৈরির দৃষ্টিকোণকে দর্শকের দরবারে সুন্দর করে পরিবেশন করেছেন অমিতাভ, প্রভাস, দীপিকা। শুধু অ্যাকশন বা সিরিয়াস চরিত্রের মাঝে রয়েছে মজার দৃশ্যও যাতে দর্শককের একেবারেই একঘেয়ামি না লাগে। সিনেমার প্রথমার্ধে কিছু খামতি চোখে পড়লেও দ্বিতীয়ার্ধের ঠাসা VFX কল্কির অন্যতম আকর্ষণ।
অশ্বত্থামার চরিত্রে অমিতাভ বচ্চন সঠিক চয়েজ। তিনিই কিন্তু, ছবির নায়ক, প্রভাস নয়। বিগ বি তাঁর অভিব্যক্তি দিয়ে আরও একবার দর্শকের দিল জিতে নিলেন। এই বয়সেও তিনি যে ভাবে অশ্বত্থামার চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরেছেন তাতে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভারতীয় অভিনেতাদের মধ্যে একজন। ভৈরব চরিত্রে প্রভাস হয়তো আরও ভালো হতে পারত। তাঁর চরিত্রে কোন বিশেষ চাপ নেই তবে গভীরতার যেন একটা অভাব রয়েছে।
বেশ কিছু দৃশ্যে প্রভাস দর্শককে হাসানোর চেষ্টা করছেন। সেই সময় সংলাপের প্রয়োগ বা কথোপকথনে যেন একটা সমস্য়া রয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা নারী ভূমিকায় দীপিকা দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সিনেমায় তাঁর যে বিরাট কোনও ভূমিকা রয়েছে এমনটা নয়, অথচ গল্পটা কিন্তু, তাঁকে ঘিরেই। কল্কির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র কমল হাসান। পোস্টার বা টিজারে তাঁর মেক আপ সকলের নজর কেড়েছিল কিন্তু, সিনেমায় কমলের উপস্থিতি খুবই সীমিত। সব মিলিয়ে ছবিটি যেন ভিএফএক্স -এর আঁতুড়ঘর।