কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ এবং মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরব বাংলাদেশের তারকারাও। কোটা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পড়ুয়াদের একাংশ। যে দাবি নিয়ে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন, সেই ৯ দফা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষোভ এবং সমাবেশ করেছেন চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে জড়িত এবং শিল্পীরাও।
এবার এই আন্দোলন নিয়ে মুখ খুললেন জয়া আহসানও। সেখানে এত মানুষের মৃত্যু তাঁকে নৈরাশ্য এবং বিষণ্ণতার একটা দিকহীনে সুড়ঙ্গে ছুড়ে দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং দুই বাংলাতেই জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই, দলের একটি সভায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা এত মৃত্যু কেন হয়েছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘একটা জিনিস গেলে তা ফিরে পাওয়া যায়, কিন্তু জীবন গেলে তা আর ফিরে পাওয়া যায় না।’ এরই সঙ্গে পড়ুয়াদের দাবি পুরোটাই মেনে নেওয়ার পরেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কেন বাংলাদেশের অনেক জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তি এই আন্দোলনকে সমর্থন করছেন সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শেখ হাসিনা।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবারই ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন শিল্পীরা। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই সেই সমাবেশ করেন তাঁরা। আগেই অভিনেতা এবং শিল্পীদের অনেকেই সেখানের কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করেছেন। এবার এই আন্দোলন নিয়ে কথা বলেছেন জয়া আহসান । তিনি জানান, এতগুলি মৃত্যুতে খুবই বিষণ্ণ তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে, একটি ফেসবুক পোস্টে, এই অভিনেত্রী লেখেন ‘প্রাণগুলো চলে গেছে, বিষণ্নতা রেখে গেছে। এই এত এত তাজা প্রাণের দাম তো অনেক, আমরা যে অনেক বেশি ঋণী হয়ে বেঁচে রইলাম!’ সেখানের এই নৈরাশ্য তাঁকে ‘শূন্যতার দিকহীন সুড়ঙ্গে ছুড়ে দিয়েছে’ বলেও জানিয়েছেন জয়া।
এই অভিনেত্রী লেখেন, ‘এত মৃত্যু এত কান্না আমার মুক্তিযোদ্ধা পিতার রক্ত-ঘামের বাংলাদেশে বইবে কেমন করে। যে জীবন গিয়েছে তা আর ফিরে আসবে না। যে ক্ষত আমাদের মনে সৃষ্টি হলো তা অমোচনীয়। কেমন করে পথ চলবো আমরা। অবিশ্বাস-অনাস্থা ঘৃণার আবহে পথ হারিয়ে ফেলবো কি আমরা!’
দিশাহীন এবং বোধহীন হয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তিনি হতাশায় নিমজ্জিত বলেও জানিয়েছেন জয়া। এই ‘অমানিশায়’ কী ভাবে পথ চলবেন তারা বলে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। একই সঙ্গেই শান্তি চেয়ে এই ‘হত্যা-মৃত্যু-হানাহানি অতিক্রম করে একে-অপরের হাত ধরে ভালোবাসায় কান্নায় যুথবদ্ধ’ পথ চলার আবেদনও জানান তিনি।